বাঙালি মুসলিমরা বুঝতে পেরেছে মমতা কীভাবে তাদের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করেছে, কটাক্ষ সেলিমের
লোকসভা ভোটের আবহে সরগরম রাজ্য – রাজনীতি। রাজ্যে গেরুয়া শিবির ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করতে গাঁটছড়া বেঁধেছে CPI(M) ও কংগ্রেস। নির্বাচনী প্রচারেও সেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভোটের ময়দানে কেউ কাউকেই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের বিষয়টিকে আবারও সামনে এনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন CPI(M)-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ছাড় দিলেন না BJP-কেও। ৭ মে মুর্শিদাবাদে ভোট। তার আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,”গত দু’টি নির্বাচনে তৃণমূল ও BJP-র মধ্যে লড়াই দেখিয়ে একটি মিথ্যা প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষের কাছে একটি বিকল্প আছে আর তা হল বাম-কংগ্রেস জোট।
মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে বামেদের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে লড়ছেন আবু তাহের খান। সেখানেই প্রচার শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একাধিক ইস্যুতে সরব হন বামনেতা সেলিম।
বামেদের তরুণ প্রজন্মকে সামনে আনার কৌশল এই নির্বাচনে কি ভিন্ন ফলাফল দেবে? এই প্রসঙ্গে বামনেতা বলেন, ” বর্তমানে ভোট চলছে। সেইদিকে ফোকাস করুন। অতীতের কথা ভুলে যান। এমনকি প্রার্থীদের কথাও ভুলে যান। শুধু ভোটারদের কথা ভাবুন।”এদিন তিনি ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের তথ্য পরীক্ষা করার কথা বলেন। CAA, NRC বালাকোটের প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী শিবিরকে তুলোধনা করেন।”
বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের নির্বাচনী এজেন্ডা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “BJP যখন UCC (ইউনিফর্ম সিভিল কোড) এবং রামমন্দির নিয়ে কথা বলেছিল,তখন বামেরা রুজিরুটির সমস্যা এবং মুদ্রাস্ফীতির কথা বলছিল। তৃণমূল বাংলার আসল সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা না করে বরং অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।”
বাংলার রাজনীতিতে বাম ও কংগ্রেসের বর্তমান অবস্থান জানতে চাইলে তাঁর বক্তব্য, গত দুটি নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল এবং BJP-র মধ্যে লড়াই নিয়ে একটি মিথ্যা প্রচার চলছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে যে তৃণমূলের কাজ হল RSS-এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। বাংলা থেকে মার্কসবাদীদের উৎখাত করার জন্যই খোদ RSS তৈরি করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তবে এখন বিকল্প হিসেবে জনগণের কাছে বাম-কংগ্রেসের মতো দল আছে।
জোটে ISF না থাকায় ফলাফলে কি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে? উত্তরে সেলিম বলেন, “যখন বেলঙ্গুরুতে INDIA জোট গঠন হয়েছিল, তখন ISF বলতে শুরু করেছিল যে INDIA জোটের সঙ্গে কেউ যুক্ত হলে, তাকে বিশ্বাস করা যাবে না। তারা আলাদা পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। ISF নিজস্ব একটা ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করতে চায় যা বাম-বিরোধী বা বামপন্থী নয়। অনেকটা BJP-TMC-র মতো।”
কেন INDIA জোট রাজ্যে কার্যকরী হতে পারেনি? উত্তরে তিনি জানান,এটা কোনও নির্বাচনী জোট নয়। বরং এটা ভারতবর্ষের বৈচিত্র্য এবং ঐক্য রক্ষার স্বার্থে তৈরি একটা জোট। রাজ্যে বামেরা BJP ও TMC উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়ছে।
সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে তিনি বলেন,”কোনও নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠী কোনও রাজনৈতিক দলের স্থায়ী সমর্থক নয়। মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন, সংখ্যালঘুর ভোট তৃণমূলের পক্ষে চিরস্থায়ী হবে কিন্তু উত্তরবঙ্গ,দক্ষিণবঙ্গে দিনাজপুর, মালদা এবং মুর্শিদাবাদের বাঙালি মুসলিমরা বুঝতে পেরেছে যে মুখ্যমন্ত্রী তাদের ভুল বুঝিয়ে এসেছে এতদিন যে তৃণমূল BJP-র বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বরং এখন তারা বুঝতে পারছে যে আসলে BJP-র জন্য এতদিন ধরে পথ তৈরি করেছিল খোদ তৃণমূল আর সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করেছিল। আসলে তৃণমূল RSS-কে সাহায্য করেছে, বিশেষ করে CAA এবং NRC নিয়ে।” সংসদে BJP-কে সমর্থন করার প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, নিজেকে এবং তাঁর ভাইপোকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী BJP-র সঙ্গে জোট করেছেন।
সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@NagarNama424
ফলো করুন ফেসবুক পেজ– https://www.facebook.com/nagarnamanews
ফলো করুন X হ্য়ান্ডেলে – https://twitter.com/nagarnama