শহরের কোলাহল থেকে দূরে, বর্ষবরণের আড্ডা জমে উঠুক এখানে

শহর থেকে খুব কাছেই। তবে এখানে নেই তেমন ব্যস্ততা বা কোলাহল। নেই এত ভিড়। যদি একঘেয়ে শহর যাপন থেকে ছুটি নিতে ইচ্ছে হয়, তাহলে রাঙামাটির পথ ধরে বেরিয়ে পড়ুন গুড়গুড়িপাল জঙ্গলের উদ্দেশে। পাখির ডাক, নদীর স্নিগ্ধতা, লাল মাটির এলাকার সুপ্রাচীন ইতিহাস, গভীর জঙ্গলের নিস্তব্ধতা সমস্ত কিছু রয়েছে আপনার অপেক্ষায়।

সদ্য বড়দিন পেরিয়ে এখন সবাই নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর গুড়গুড়িপালের জঙ্গলে রয়েছে একান্তে উপভোগ করার সমস্ত আয়োজন। বনভোজন, কংসাবতী নদীর তীরে সূর্যাস্ত, গোপগড় পার্কের ভিতরে বিরাট রাজার বাড়ি, হাতির ডেরার মধ্যে দিয়ে গা ছমছমে জঙ্গল পথ, লালমাটির রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো থেকে শুরু করে আদিবাসীদের গ্রাম কিংবা অদূরে দিঘিতে স্নান। এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।

গুড়গুড়িপাল। পশ্চিম মেদিনীপুরের ছোট্ট একটি এলাকা। চারদিকেই ঘন জঙ্গল। মূলত আদিবাসীদের বসবাস। হাতির হামলার আতঙ্কে রাত কাটে এদের। দিন হলে শালপাতার থালা তৈরি, মহুয়া ফল সংগ্রহ সহ, টুকটাক ভেষজ গাছের চাষবাস ইত্যাদি করে পেট চালানোর চেষ্টা করে। সকালে কিছু খেয়ে জঙ্গলের বুক চিরে চলে যাওয়া লাল মাটির পথ ধরে বেরিয়ে পড়ুন। হেঁটেই ঘুরে দেখুন হাতির সাম্রাজ্য অর্থাৎ এই জঙ্গলের সৌন্দর্য। দুপুরে মাটির হাঁড়িতে লাল মুরগির মাংস আর ভাত খেয়ে শালের ছাওয়ায় বিশ্রাম করুন। বিকেল কাটুক কংসাবতীর তীরে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে। সন্ধ্যা নামলেই ধামসা মাদলের তালে মেতে উঠুন। জোনাকির আলো, ঝিঁঝি পোকার শব্দ, শিয়ালের ডাকে রাত নামুক।

এখানেই শেষ নয়। একটু চেষ্টা আর পরিশ্রম করলে আশপাশে একাধিক জায়গা ঘুরে আসা যেতে পারে। তালিকায় রয়েছে –
ক্ষুদিরামের জন্মস্থান মোহোবনি গ্রাম
বন্ধ হয়ে যাওয়া ফিল্ম সিটির অবশিষ্টাংশ
বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
নাড়াজোল রাজবাড়ি ও হাওয়া মহল
কর্ণগড় মহামায়া মন্দির ও জয়চণ্ডী মন্দির
নবাবী আমলের মন্দিরের গ্রাম পাথরা
পাঁচখুড়ির হাট

আরও পড়ুন : রামপুরিয়া, হারিয়ে যান শহর থেকে দূরে এক নির্জন প্রান্তরে

ঠাঁই

মাথাগোঁজার জন্য খুব একটা চিন্তা করে লাভ নেই। গুড়গুড়িপাল নেচার স্টে, টেন্ট সহ একাধিক থাকার জায়গা রয়েছে।

যাত্রাপথ

ধর্মতলা থেকে মেদিনীপুর টাউন পেরিয়ে গুড়গুড়িপাল। কলকাতা-ঝাড়গ্রামের SBSTC বাসের টিকিট নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল ধরেও যাওয়া যায়। স্টেশন বা বাসস্টপ থেকে বাসে করে আর টোটোয় চেপে কিছুটা পথ যেতে হবে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যা নেই। বাজেট সাধ্যের মধ্যে। আর দূরত্বও খুব একটা নয়। তাই বেশি না ভেবে বেরিয়ে পড়ুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.