রামপুরিয়া, হারিয়ে যান শহর থেকে দূরে এক নির্জন প্রান্তরে
অনেকেই পাহাড় জঙ্গল বেশি পছন্দ করেন। উইকেন্ড পেলেই বা অল্পদিনের ছুটিতে কাছাকাছি কোথাও বা উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে অনেকের আবার একটু অফবিট জায়গা বেশি পছন্দের। আর এক্ষেত্রে অন্যতম সেরা হল রামপুরিয়া। উত্তরবঙ্গের একটি ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম।
এটি মূলত সিঞ্চল বা সেঞ্চল ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারির অন্তর্ভুক্ত একটা হ্যামলেট। এককথায় বলতে গেলে এখানকার মনোরম আবহাওয়া, ভ্যালি, কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য আর পাইনের সারি আপনাকে মুগ্ধ করবেন। সর্বত্র যেন এক অদ্ভুত শান্তি। উল্লেখ্য, পক্ষীপ্রেমীদের জন্য এই গ্রাম স্বর্গরাজ্য। নজর কাড়বে রাংগলি-রংলিওট চা বাগানের সবুজ প্রান্তর। প্রিমুলা, অর্কিড থেকে শুরু করে রোডোডেনড্রন, ম্যাগনোলিয়াস সহ একাধিক ফুলের মেলা এখানে। বন্য অর্কিডের মায়া ছেড়ে বেরোনো সত্যি কষ্টকর। প্রকৃতি থেকে একটু অবসর পেলে রবী ঠাকুরের যাদুঘর, সিম্বিডিয়াম অর্কিড কেন্দ্র দেখা যেতে পারে। কাছেই রয়েছে ঝর্না, গুহা। যদি আর একটু ঝুঁকি নেন, তাহলে লামাহাট্টা, তাকদা থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। সবমিলিয়ে ৪০-৫০ টি ঘর নিয়ে গড়ে উঠেছে এই ফরেস্ট ভিলেজ। তবে সর্বত্র যেন একটা আদিম সৌন্দর্য ছড়িয়ে। ভোরের দিকে তো একদম রোমাঞ্চকর পরিবেশ। দূর থেকে ভেসে আসা ঝর্নার শব্দ, ভেসে আসা মেঘ, আবছা অন্ধকার, কুয়াশা। সে এক অদ্ভুত অনুভূতি।
একটু দূরেই রয়েছে জঙ্গল। বেরিয়ে পড়ুন জঙ্গল সফরে। জঙ্গলের ভিতরে গেলে দেখা হবে কালী নদীর সঙ্গে। টাইগার হিল এই নদীর উৎস। এর সবুজ জলের শব্দে, শ্যাওলাধরা সবুজ লোহার ছোট্ট পুলে যেন নির্জনতা ছড়িয়ে রয়েছে। দিনের শেষে পাখির ডাকে সন্ধ্যা নেমে আসুক। রাতের সঙ্গী হয়ে উঠুক ঝর্নার অস্পষ্ট শব্দ, নীরবতা, মাঝসাঝে পাখিদের ডাক।
ঠাঁই
জায়গাটি অপেক্ষাকৃত নতুন। তবে কয়েকটি হোমস্টেই রয়েছে। এদের মধ্যে রামপুরিয়া হোমস্টে সুপরিচিত। এখানে থাকা ও খাওয়ার সুবন্দোবস্ত রয়েছে। তাই ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন।
যাত্রাপথ
হাওড়া থেকে ট্রেন। নিকটবর্তী স্টেশন NJP। পরে তাকদা গামী বাস বা শেয়ার গাড়িতে যাওয়া যায়। শিলিগুড়ি থেকেও শেয়ার গাড়িতে করে জোড়বাংলো সেখান থেকে রামপুরিয়া যাওয়া যায়। নিকটতম বিমানবন্দর বাগডোগরা।