জঙ্গল, পাহাড় থেকে জলপ্রপাত ; ঘুরে আসুন সাতশো পাহাড়ের দেশ
কলকাতা থেকে খুব দূরে নয়। ওড়িশার সীমান্তও ছুঁয়ে রয়েছে এই এলাকাকে। চারিদিকে শাল বন, লাল মাটির রাস্তা, খনি আর বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে পাহাড় ও জঙ্গল। বসন্তের শুরুতে ঘুরে আসুন ঝাড়খন্ডের সারান্ডার জঙ্গল ও কিরিবুরুতে।
লাল মাটির এই রুক্ষ দেশে একের পর এক পাহাড়ের ভিড়। তাই নাম সাতশো পাহাড়ের দেশ। তবে এই রুক্ষতায় এক অদ্ভুত মায়া জড়িয়ে রয়েছে। শিল্পাঞ্চল, খনির টানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে শ্রমিক এখানে হাজির হয়। এখানেই তাদের রুজি রোজগার। কিরিবুরু যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি খনি পড়ে। সুযোগ বুঝে আশপাশটা দেখে নেওয়া যেতে পারে। পাহাড়ের নীচ থেকে কনভেয়ার বেল্টে উঠে আসছে রাশি রাশি লৌহ আকরিক। মানুষজন, ঘর-বাড়ি, গাছপালা, গাড়ি, ডাম্পার সব যেন লাল ধূলোয় ঢেকেছে। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য।
এরপর আসা যাক জঙ্গলের দিকে। প্রায় ১,১০০ হেক্টরজুড়ে জঙ্গল। লাল মাটি খনির রুক্ষতার মাঝেও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে নিজের ছন্দে বয়ে গেছে কারো ও কয়না নদী। রয়েছে ঝর্নাও। এশিয়ার বৃহত্তম শাল বনভূমি এটি। রয়েছে ঝিকরা জলপ্রপাত। সাতশো পাহাড়ের দেশ সারান্ডা থেকে ৩৫ কিমি দূরে ভারতের অন্যতম প্রাচীন বন বিশ্রাম গৃহ আছে থলকাবাদে। সারান্ডা, পোড়াহাট থেকে শুরু করে আশপাশের জঙ্গলে হাতির পাশাপাশি বাঘ ও বাইসন দেখা যায়। তবে মানুষজনের উপদ্রবে জঙ্গলের অনেক অংশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
পড়ন্ত বিকেলে এই শান্ত জঙ্গল আর আশপাশের এলাকা যেন অদ্ভুতভাবে টানে। সেই মায়া কাটিয়ে হোটেলে ফেরা খুব মুশকিল। তবে কোনও একটা সূর্যাস্ত মন ভরে উপভোগ করা যেতে পারে। একটা সময়ে এই এলাকাগুলিতে নক্সাল ও মাওবাদীদের আধিপত্য ছিল। তবে বিগত কয়েক বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। আপাতত, নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারেন পর্যটকরা। এক্ষেত্রে আদর্শ সময় হল অক্টোবর থেকে মার্চ।
যাত্রাপথ : কলকাতা থেকে খুব একটা দূরে নয়। হাওড়া থেকে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। গন্তব্য বড়বিল। স্টেশন থেকে খুব বেশি দূর নয় মূল গন্তব্য।
ঠাঁই : স্টেশনের আশপাশেই থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। ছোটো বড় প্রচুর হোটেল রয়েছে। সব মিলিয়ে দু’রাত আর তিনদিনের জন্য মাথাপিছু হাজার ছয়ের খরচ পড়বে। এক্ষেত্রে আগে থেকে বুক করে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।