কলকাতা স্নিগ্ধতা ও ঐতিহ্যের সাক্ষী : জন চার্নক
একজন ব্রিটিশ বেনিয়া কীভাবে এই উপমহাদেশের এক অজপাড়াগায়ে এসে আস্তানা গাড়লেন? ধীরে ধীরে স্থাপন করলেন সুতানুটি, গোবিন্দপুর কলিকাতা। প্রায় সাড়ে ৩৫০ বছর পুরোনো ইতিহাসে সমৃদ্ধ কলকাতা নগরের সৃষ্টি এক ইংরেজ সওদাগরের হাতে, নাম জব চার্নক। ঠিক তার এত বছর পেরিয়ে কলকাতার মাটিতে পা রাখলেন তাঁর উত্তরসূরী, জন চার্নক। প্রানের শহর কলকাতার প্রতি ভালবাসার কথা উজাড় করে এবং একটি প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণ করতে, শহরটি আরো ভালোভাবে আত্মসাধে তিনি সপরিবারে কলকাতায় আসেন।
জন চার্নক : ১৫ বছর বয়সে তাঁর পিতার মুখে কলকাতার কথা শোনেন তিনি। বাবার স্বপ্ন অনুযায়ী ভিয়েতনাম থেকে ফেরার পথেই নিশ্চিত করেন পরের ডেস্টিনেশন।জনের ভারতীয় এক পাঞ্জাবী বন্ধু, ক্যালকাটা ওয়াকস অ্যান্ড ক্যালকাটা বাংলোর প্রতিষ্ঠাতা, ইফতেহার আহসান তাঁদের ট্রিপ প্ল্যানে সাহায্য করে।প্রথম দিন শুরু করেন কলকাতার ফুলের বাজারের একটি সফরের মাধ্যমে। ধীরে ধীরে গঙ্গায় নৌকা ভ্রমণ, জব চার্নকের সমাধি এবং কলকাতার স্ট্রিট ফুডের আনন্দ উপভোগ করেন। এমনকি তারা দুর্গা এবং কালীর (কুমারটুলি) মূর্তি তৈরি করার জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ শুরু করেন।কেনাকাটার ক্ষেত্রে,ডেবোরা (তার স্ত্রী) মাহির ছিলেন এবং গন্ধের কারণে প্রচুর মশলাপাতি কিনেছিলেন।
জন চার্নক কলকাতার সফরের ইতিহাস এবং সাংস্কৃতির এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, কলকাতা একটি শহর যা অতীত এবং বর্তমানের মেলবন্ধন ঘটায়। এখানে ইতিহাস এবং আধুনিকতা একত্রে রয়েছেন। যদিও কলকাতা সম্পর্কে তাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছিল তা হল স্থাপত্য। এটা অত্যাশ্চর্য, কিন্তু দুঃখজনক। যেখানেই তাকান, সেখানে এই আশ্চর্যজনক বিল্ডিংগুলি রয়েছে, তবে সেগুলির মধ্যে গাছ বাড়ছে। এরপর তিনি কলকাতা আড্ডা সাংস্কৃতির সাথে পরিচিত হন। আড্ডার মাধ্যমে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা এবং তাদের চিন্তা ভাবনা বোঝেন। এটি কলকাতা সংস্কৃতির একটি মৌলিক অংশ, যা তিনি অনুভব করেন। কথায় কথায় তিনি জানান,যে খুবই গর্বিত ছিলেন, যে তারাও একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী পেয়েছিলেন।
এই অভিজ্ঞতা জন চার্নককে কলকাতার ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার এক নতুন দৃষ্টিতে দেখতে সাহায্য করেছে। শহরের প্রতিটি কোণে রয়েছে ইতিহাস এবংসংস্কৃতির এক বিশেষ মেলবন্ধন, যা কলকাতাকে সত্যিই একটি বিশেষ স্থান করে তোলে। তিনি ফের কলকাতায় ফেরার আশা রেখে গিয়েছেন।