খবরছবিঘর

অজানা সুন্দরবন

পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা। মূলত এই তিন নদীর সৌজন্যে গড়ে ওঠা প্রকৃ্তির এক অনিন্দ্য সুন্দর সৃষ্টি হল সুন্দরবন। নামটা শুনলে প্রথমেই ম্যানগ্রোভের জঙ্গল কিংবা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের নাম মাথায় আসে। কিন্তু সুন্দরবনের ঘন জঙ্গলে এমন অনেক তথ্য লুকিয়ে আছে, যা সত্যিই অবাক করে। আসুন ঘুরে আসা যাক এই বদ্বীপে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি রয়েছে সুন্দরবনে। এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল এখানকার লবণাক্ত উপকূলবর্তী এলাকা। এর জেরেই ম্যানগ্রোভের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে।

তথ্য বলছে, ভেনিসের থেকে দশ গুণ বড় সুন্দরবন। এর আয়তন প্রায় ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার। যার মধ্যে ১০২ টি দ্বীপ রয়েছে। এই ১০২ টি দ্বীপের মধ্যে ৫৪ টি দ্বীপে মানুষের বসবাস। বাকি দ্বীপগুলি অবশ্য পুরোটাই জঙ্গলে ঢাকা।

সুন্দরবনের মোট এলাকার ৪০ শতাংশ ভারতে রয়েছে। বাকিটা বাংলাদেশে। সুন্দরী গাছ। এই ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের নামেই সুন্দরবনের নামকরণ।

সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সুন্দবনের সৌন্দর্য ও অন্যতম সম্পদের পাশাপাশি এটি এখানকার জনজীবনের জন্য অত্যন্ত দুশ্চিন্তার কারণ।

উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় প্রায় সময় জোয়ার-ভাটা, সাইক্লোন, গভীর নিম্নচাপের শিকার হতে হয় এই এলাকাকে। অধিকাংশ সময় জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে আশপাশের দ্বীপে বিশেষ করে বসতি এলাকা প্লাবিত হয়।

বিধবাদের গ্রাম। সুন্দরবনের এ এক অন্য দিক। এর পিছনে রয়েছে বাঘ। মধু আনতে গিয়ে কিংবা মাছ ধরতে গিয়ে আর ঘরে ফেরা হয় না স্বামীদের। প্রতিবছর বাড়তে থাকে বিধবাদের সংখ্যা।

পৃথিবীতে প্রায় ৫০ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ রয়েছে। উল্লেখ্য, এর মধ্যে প্রায় ৩৫টি প্রজাতিই সুন্দরবনে বিদ্যমান। সুন্দরী, গেওয়া, ধুন্দল, গরাণ, বাইন, কেওড়া সহ একাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ দেখা যায় এখানে।

সুন্দরবনে প্রায় ২৮৯ প্রজাতির স্থলজ প্রাণীর বসবাস। চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, বানর, সজারু থেকে শুরু করে নানা প্রাণী দেখা যায় এখাকার জঙ্গলে। প্রায় ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে সুন্দরবনের জঙ্গলে।

এখানে প্রায় ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর ও নানা প্রজাতির মাছ সহ ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী রয়েছে। কুমিরের পাশাপাশি অজগর, কেউটে ও গোখরো দেখা যায় এখানে।

স্থানীয় পাখি ছাড়াও প্রায় ৫০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি দেখা যায় এখানে। যা সুন্দরবনের সৌন্দর্যকে এক আলাদা মাত্রা দান করে।

এগুলির পাশাপাশি প্রায় ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, নানা প্রজাতির শামুক, ঝিনুক সহ প্রায় ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *