শহর থেকে দূরে কোথাও, ঠিকানা হোক শিউলিবোনা

ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। অনেকে এখনও ওয়ার্ক ফ্রম হোমে দিনযাপন করছেন। অনেকে আবার রোজকার ব্যস্ত শহরে, উইকেন্ডে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার প্ল্যানে হাঁপিয়ে উঠেছেন। এক্ষেত্রে শহর থেকে কয়েক ঘণ্টার দূরত্বেই সবুজ প্রকৃতি আর এক অদ্ভুত নির্জনতা আপনার অপেক্ষায়। চলুন ঘুরে আসা যাক আদিবাসী গ্রাম শিউলিবোনা।

বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের উত্তরপূর্ব ঢালের গভীর জঙ্গলের পাদদেশেই রয়েছে এই আদিবাসী গ্রাম। ঘন জঙ্গল, জলাশয় সমস্ত কিছু নিয়ে শিউলিবোনা। অকৃত্রিম আদিম প্রকৃতি যেন বহুকাল ধরে বসে আছে। এখানকার নির্জনতার নেশা উপেক্ষা করা সত্যিই মুশকিল। জঙ্গলের মধ্যে নানা ইতিহাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। ট্রেকিং করে পৌঁছনো যায় প্রাগৈতিহাসিক গুহায়। এখানে একাধিক জীবাশ্ম তাদের ইতিহাসে আগলে আজও বিদ্যমান। জীবাশ্মগুলি দেখে বোঝা যায়, এককালে এই জঙ্গলে সিংহ, জিরাফের দল দাপিয়ে বেড়িয়েছে। শিলালিপিগুলোও অনেক কিছু বলে যায়। এদিক থেকে এখনও খুব একটা হতাশ হবেন না। কারণ রাতের আঁধারে খরগোশ, সজারুদের আনাগোনা এখনও রয়েছে। সকালে ঘুম ভাঙাতে রোজ হাজির হয় বহু নাম না জানা পাখির দল। সর্বোপরি, জঙ্গল ছুঁয়ে গড়ে ওঠা এই আদিবাসী গ্রামের আতিথেয়তা মুগ্ধ করবে আপনাকে।

এক কথায় বলতে গেলে, শিউলিবোনার সৌন্দর্যের কাছে নিঃশর্তেই একটি উইকেন্ড বন্ধক রাখা যায়। বড়ন্তী লেক, ড্যাম, গড় পঞকোট, বিহারীনাথ পাহাড় সবাই আপনার অপেক্ষায়। সুযোগ বুঝে বিষ্ণুপুর বা মুকুটমণিপুরও ঘুরে আসা যায়।

ঠাঁই – মাথা গোঁজার তেমন কোনও অসুবিধা নেই। একাধিক উইকেন্ড স্টে রয়েছে। প্রত্যেকটি কটেজও বেশ সাজানো-গোছানো। এক রাত, দুদিনের ট্রিপে খরচ এই ৩০০০- ৩,৫০০ টাকা। সঙ্গে নানারকম সুস্বাদু খাবার।

যাত্রাপথ – গন্তব্য় খুব বেশি দূরে নয়। নিজস্ব গাড়ি বা ট্রেনে করেই পৌঁছে যাওয়া যায় শিউলিবোনায়। কলকাতা থেকে ঘণ্টা পাঁচেক। তাই আর দেরি না করে ব্যাগ গুছিয়ে ফেলুন। আদিমতার হাতছানি দিয়ে ডাকছে শিউলিবোনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.