খবরদেশ

বন্যা বিধ্বস্ত গুজরাতে মৃত ৪০-র বেশি, লোকালয় থেকে উদ্ধার ২৪ টি কুমির

আগস্টের শেষ থেকেই টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাত। বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে গুজরাটের একাধিক নদী। প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জল বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৪০-র বেশি। কারও জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে, কেউ আবার বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন।

রাজ্যে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের জন্য ১৪ টি জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (NDRF) এবং ২২টি রাজ্য বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী (SDRF) দলকে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনীর ছয়টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যের ত্রাণ কমিশনার অলোক পান্ডে জানিয়েছেন, বন্যা কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ৪০,০০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে কুমির।

বরোদা শহরের মাঝ বরাবর বয়ে গেছে বিশ্বমিত্রী নদী। প্রবল বৃষ্টিতে নদীতে জলস্তর বেড়ে গিয়ে জল ঢুকে পড়ছে বরোদা শহর ও তার আশে পাশের এলাকায়। আর জলের সঙ্গে ঢুকে পড়ছে কুমির। গত ২৭ থেকে ২৯ আগস্টের মধ্যে গুজরাট বন বিভাগ প্রায় ২৪ টি কুমির উদ্ধার করেছে। বিভিন্ন সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তার ছবি। কুমির কখনও ঢুকে যাচ্ছে কারোর বাড়িতে আবার কখনও কারোর বাড়ির ছাদে। স্বভাবতই ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।

যদিও বরোদার আঞ্চলিক বন আধিকারিক (RFO) জানিয়েছেন মানুষের উপর কুমির আক্রমণের মত কোনো ঘটনা এখনও ঘটেনি। তার কথায়, “সাধারণত, কুমির মানুষকে আক্রমণ করে না। নদীতে মাছ ও পশুর মৃতদেহ খেয়ে বেঁচে থাকে। তারা কুকুর, শূকর বা অন্য কোনো ছোট প্রাণীকে মেরে খেতে পারে।”

লোকালয় থেকে ২৪ টি কুমির ছাড়াও, বন বিভাগ একাধিক বিষধর সাপ, কোবরা, প্রায় ৪০ কেজি ওজনের পাঁচটি বড় কচ্ছপ এবং একটি সজারু সহ ৭৫ টি অন্যান্য প্রাণীকেও উদ্ধার করেছে।

বরোদা রেঞ্জ ফরেস্ট অফিসার করণসিংহ রাজপুত বলেন, “বিশ্বমিত্রী নদীতে প্রায় ৪৪০ কুমির রয়েছে। আজওয়া বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে অনেক কুমির অন্যান্য জন্তুরা শেপাশের এলাকায় প্রবেশ করেছিল।”

তিনি আরও জানান, “আমরা সবচেয়ে ছোট যে কুমিরটি উদ্ধার করেছি সেটি ছিল ২ ফুটের। আর সবচেয়ে বড় উদ্ধার হওয়া কুমিরটি প্রায় ১৪ ফুট লম্বা। নদীর ধারে অবস্থিত কামনাথ নগর থেকে ধরা পড়েছিল সেটি। এছাড়াও ১১ ফুট লম্বা আরও দুটি কুমিরও উদ্ধার করা হয়েছে।”

যদিও নদীর জলের স্তর নামলেই উদ্ধারকৃত কুমির ও অন্যান্য সরীসৃপকে আবার নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *