প্রথম শটের পর শুনতে হয়েছিল গেট আউট, মনোজের ছবি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর
কেটে গেছে তিন দশকের বেশি সময়। তবে ভারতীয় তথা বিশ্ব সিনেমায় এই নামটি ভোলা মুশকিল। সত্যা, শুল, গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর। একের পর এক ক্রাফ্টের চুলচেরা বিশ্লেষণ আর সেইমতো দুরন্ত অভিনয়ের জেরে আজ সিনে প্রেমীদের মনে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছেন মনোজ বাজপেয়ি (Manoj Bajpayee) । ঝুলিতে রয়েছে তিনটি জাতীয় পুরস্কারও। কিন্তু এই কিংবদন্তী অভিনেতাকেও প্রথম শটের পর শুনতে হয়েছিল গেট আউট ! কী হয়েছিল সেদিন ?
বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে এক কৃষকের বাড়িতে বেড়ে ওঠা। ৫ ভাইবোনের সংসারে একটি কোলড্রিঙ্কস খেতেও জমাতে হত পয়সা। তবে ছোটো থেকেই স্থির করে নিয়েছিলেন অভিনেতা হবেন। ১৭ বছর বয়সে দিল্লি পাড়ি দেন। শুরু হয় টিকে থাকা আর সুযোগ পাওয়ার লড়াই। তবে নিয়তি বোধহয় শুরু থেকেই মনোজের ভাগ্যের পাল্লায় হতাশা আর ব্যর্থতা একটু বেশি রেখে দিয়েছিল। পরপর তিন বার NSD থেকেই রিজেক্ট হয়েছিলেন। কার্যত মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, একসময় ভেবেছিলেন আত্মহত্যা ছাড়া বোধহয় আর কোনও পথ নেই। মনোজের গতিবিধি যে ভালো না, তা টের পেয়েছিল বন্ধুরা। তাই সেইসময় কখনও মনোজকে একা ছাড়ত না তারা।
এরইমাঝে একবার সিনেমায় শ্যুটিংয়ের সুযোগ পান মনোজ। এতদিনের স্বপ্ন এবার হয়তো পূরণ হবে। কিন্তু প্রথম শটের পর ছবির পরিচালক তাঁকে গেট আউট বলে দেন। এখানেই শেষ নয়, তাঁর ছবি ছিঁড়ে ফেলে দেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। সেইসময় একদিনেই পরপর তিনটি প্রজেক্ট থেকে বাদ পড়েন। ব্যান্ডিট কুইনে যে বছর সুযোগ পেলেন, সেবার এক চায়ের দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ তিগমাংশু ধুলিয়া একটি স্কুটিতে এসে খবর দেন শেখর কাপুর তাঁকে ব্যান্ডিট কুইনে কাস্ট করতে চান। এরপর মুম্বইয়ে পাড়ি দেন তিনি। বাকিটা ইতিহাস।
ব্যান্ডিট কুইনের পরও লম্বা লড়াই জারি ছিল। আর লড়াইটা কঠিন ছিল। মনোজের কথায়, সহজ ছিল না এই দীর্ঘ কেরিয়ারের যাত্রাপথ। কেউ যেন এভাবে এত সমস্যার সম্মুখীন না হয়। একটি সিনেমা আর ভালো চরিত্রের জন্য বহুদিন লড়াই করতে হয়েছে। সত্যি বলতে, জীবন যুদ্ধে বারবার হেরে গিয়েও ফিরে আসার নামই বোধহয় মনোজ বাজপেয়ি। সময়ের ফেরে পুড়ে গিয়ে, সেই ছাই থেকেই আবার সাফল্যের ডানা মেলার নামই বোধহয় মনোজ বাজপেয়ি।