অন্যরকম

বন্ধুর ধার শোধ করতে গিয়েই সেফটিপিনের জন্ম, বাকিটা ইতিহাস

সেফটিপিন। এই ছোট্ট বস্তুটি কিন্তু অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। রোজকার জিনিসপত্রের ভিড়ে বেশ দৃঢ়ভাবেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে সেফটিপিন। তা সে ওড়না আটকানো, শাড়ি পরা হোক বা অন্য কোনও কাজ। বিশেষ করে মহিলাদের কাছে সেফটিপিনের এক আলাদা চাহিদা রয়েছে। আর এই ক্ষুদ্র জিনিসটির উদ্ভাবনের পিছনেও রয়েছে এক দারুণ ইতিহাস।

ইতিহাস হাতড়ালে সেফটিপিনের জন্মলগ্নের একটা ধারণা পাওয়া যায়। সালটা ১৮৪৯। আজ থেকে প্রায় ১৭১ বছর আগে জন্ম নিয়েছিল সেফটিপিন। কিন্তু কোনও দীর্ঘ গবেষণা বা অবসরের এক্সপেরিমেন্ট থেকে জন্মায়নি এই বস্তু। বলা ভালো, অনেকটা প্রয়োজনের তাগিদেই তৈরি হয় বর্তমানের বহুল ব্যবহৃত এই সামগ্রী। এই উদ্ভাবনের নেপথ্যে রয়েছেন তৎকালীন সময়ের বিখ্যাত যন্ত্রকৌশলী ওয়াল্টার হান্ট(Walter Hunt)। বরাবরই জিনিসপত্র নিয়ে ভাঙা-গড়ার নেশা ছিল মার্কিন মুলুকের এই বাসিন্দার। নানা ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করতেন। কোনওটা দারুণ সফল হয়েছে। কোনওটা আবার বহু চেষ্টার পরও যথাযথ অবয়ব পায়নি। তবে এবার বিপাকে পড়েছিলেন তিনি। এক বন্ধুর কাছ থেকে ১৫ ডলার ধার করেছিলেন। ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু পকেট গড়ের মাঠ। কিছুতেই বন্ধুর সেই টাকা শোধ করা যাচ্ছিল না।

বন্ধুর ঋণ শোধ করার তাগিদে ফের যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে পড়েন। যদি কিছু একটা তৈরি করা যায়, তাহলে হয়তো ঋণমুক্ত হওয়া যাবে। এদিক-ওদিক ভাবতে ভাবতে একটা লম্বা তারের টুকো বাঁকিয়ে কিছু একটা তৈরির করার চেষ্টা করেছিলেন। আর সেটাই পরে সেফটিপিনের আকার নেয়। পিন যাতে গায়ে ফুটে না যায় সেই জন্য মাথার দিকটা চ্যাপটা করে একটা খাপের মতো তৈরি করা হয়। সেই শুরু। ১৮৪৯ সালের এপ্রিলে সেফটিপিনের পেটেন্ট করিয়ে নিলেন ওয়াল্টার। বিক্রি শুরু হল। পেটেন্ট বেচে যা পেলেন তাতে বন্ধুর ধার তো শোধ হল, পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ ডলারের মালিক হয়ে উঠলেন ওয়াল্টার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *