লোলেগাঁওয়ের পথে
আচ্ছা যদি সকালে চোখ মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব সৌন্দর্য দেখা যায়। বেলা বাড়লেই কুয়াশার ভিড়ে পাইনের জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া যায়। না কোনও বারণ নেই। ইচ্ছে হলেই ওক, ফার আঁকড়ে ধরা প্রাচীন কোনও ঝুলন্ত সেতুর উপর হাঁটতে হাঁটতে মেঘ ছুঁয়েও দেখা যেতে পারে। এ আবার সম্ভব না কি ? সম্ভব। ইচ্ছে হলেই এই গন্তব্যে পাড়ি দেওয়া যায়। নাম লোলেগাঁও। আসুন ঘুরে আসি।
লোলেগাঁও। কালিম্পংয়ের মুকুট হিসেবেও পরিচিত এই ছোট্ট গ্রাম। জঙ্গল, পাহাড় আর নীরবতা মিলিয়ে অনবদ্য এই স্থান। কখনও ঘন মেঘের খেলা, কখনও কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ১,৭৬৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পার্বত্য গ্রামে এলে কেমন জানি নেশা হয়ে যায়। লেপচাদের এই গ্রামে কাছে টানবে ঘন সবুজ অরণ্য আর পাইনের জঙ্গলে ঘেরা আঁকাবাঁকা পথ। সন্ধ্যে নামলে তো রহস্যময়ী রূপ নেয় লোলেগাঁও। দেখার জন্য অন্যতম সেরা জায়গাগুলি হল ক্যানোপি ওয়াক, ইকো পার্ক ও ভি আই পি বাংলো ভিউ পয়েন্ট।
লোলেগাঁওয়ের অন্যতম আকর্ষণ হল ক্যানোপি ওয়াক। পাইন, ফার, ওক গাছের ঘন বনের মধ্যে রয়েছে সুদীর্ঘ ঝুলন্ত সেতু। ইকো পার্কে নানা ধরনের বন্যপ্রাণের সন্ধান মেলে। তবে নজর কাড়বে ভি আই পি বাংলো ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখলে আর বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করবে না।

যাত্রাপথ
ট্রেন বা বাসে প্রথমে শিলিগুড়ি পৌঁছাতে হবে। বিমানে করে বাগডোগরাও পাড়ি দেওয়া যেতে পারে। সেখান থেকে বাস, প্রাইভেট কার করে সরাসরি লোলেগাঁও। সময় লাগবে সাড়ে ৩-৪ ঘণ্টা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকেও ঘণ্টা চারেকের দূরত্ব।
ঠাঁই
কালিম্পংয়ের অন্যতম অফবিট ডেস্টিনেশন লোলেগাঁও। কম করে হলেও একটা ৩ রাত্রি – ৪ দিনের ছোট্ট ট্রিপ করা যেতেই পারে। পাশেই লাভা-রিশপ। এক্ষেত্রে বর্ষাকাল এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তবে মন চাইলে সাহস জুটিয়ে বর্ষাও উপভোগ করা যেতে পারে। বৃষ্টিস্নাত লোলেগাঁওর সৌন্দর্য কিন্তু অন্যরকম। তবে সঙ্গে ছাতা, রেনকোট এগুলি রাখতে হবে। পর্যটকদের জন্য আশপাশেই থাকার হোটেল, খাওয়ার রেস্তরাঁ রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হোম স্টে তৈরি করা হয়েছে। তাই মাথা গোঁজার খুব একটা অসুবিধা হবে না।